আজকের প্রজন্মের কাছে ‘ঢেঁকি’ শব্দটি হয়তো শুধু বইয়ের পাতায় বা প্রবাদ-প্রবচনেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু একটা সময় ছিল, যখন এই ঢেঁকিই ছিল গ্রামবাংলার প্রতিটি বাড়ির প্রাণকেন্দ্র এবং সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি। আধুনিকতার আড়ালে আমরা কি এক অমূল্য সম্পদ হারাতে বসেছি?
কেন ঢেঁকিছাঁটা চালই সেরা?
আধুনিক সভ্যতা আজ পর্যন্ত ঢেঁকির চেয়ে স্বাস্থ্যকর কোনো রাইস হাস্কিং মেশিন তৈরি করতে পারেনি। অটোমিলের মেশিনে হয়তো অনেক দ্রুত এবং বিপুল পরিমাণে চাল উৎপাদন করা যায়, কিন্তু পুষ্টিগুণ আর অকৃত্রিমতা রক্ষায় ঢেঁকিই শ্রেষ্ঠ।
এর কারণ হলো, ঢেঁকিতে ধান ভানার সময় চালের উপরের লালচে আবরণ বা ভুসি (Bran) এবং অঙ্কুর (Germ) প্রায় পুরোটাই অক্ষত থাকে। চালের ৭৫ থেকে ৯০ শতাংশ পুষ্টি, বিশেষ করে ভিটামিন-বি, আয়রন এবং জিঙ্ক এই অংশেই জমা থাকে। অন্যদিকে, আধুনিক অটো মিলে চালকে অতিরিক্ত পলিশ করে সাদা ও চকচকে করার প্রক্রিয়ায় এই бесцен্য পুষ্টিস্তরটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। একারণেই ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাতের স্বাদ, গন্ধ এবং পুষ্টিগুণ—সবই আধুনিক চালের চেয়ে বহুগুণে উৎকৃষ্ট।
শুধু চাল নয়, এক সংস্কৃতির নাম ‘ঢেঁকি’
ঐতিহাসিকভাবে, ঢেঁকি ছিল বাংলার স্বনির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতি এবং সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য প্রতীক। ব্রিটিশ বিরোধী স্বদেশী আন্দোলনের সময় দেশীয় পণ্যকে प्रोत्साहन দিতে ঢেঁকিতে তৈরি চাল, আটা এবং মশলার গুরুত্ব বহুগুণে বেড়ে গিয়েছিল।
ঢেঁকি ছিল মূলত নারীদের কর্মক্ষেত্রের কেন্দ্রবিন্দু। ধান ভানা থেকে শুরু করে চাল তৈরি—সব কাজই নারীরা করতেন। একসময় প্রবাদই ছিল, 'ঢেঁকি না চালাতে পারলে বাঙালি নারী হওয়া যায় না', যা গ্রামীণ জীবনে নারীর অবদান ও গুরুত্বকে তুলে ধরে।
যেভাবে হারিয়ে গেল ঢেঁকিশালা
ষাট-সত্তরের দশকেও বাংলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ঢেঁকিশালার অস্তিত্ব ছিল। মানুষ তখন বাজারের কেনা চালের চেয়ে নিজেদের বাড়ির ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাত খেতেই বেশি পছন্দ করত। কিন্তু বিদ্যুৎচালিত ধান ভাঙানোর কল বা হাস্কিং মিল আসার পর থেকে ধীরে ধীরে ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি তার অস্তিত্ব হারাতে শুরু করে।
ঐতিহ্যের পুনরুজ্জীবন: ঢেঁকি কি ফিরবে আবার?
আধুনিকতার চাপে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেলেও, আশার কথা হলো, মানুষ আবার নিজেদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন হচ্ছে। বর্তমানে ঢেঁকিতে তৈরি বিভিন্ন খাঁটি খাদ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ছে। এই চাহিদার কারণে বাংলাদেশের বহু জায়গায় ঢেঁকির ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চলছে।
ঢেঁকি শুধু একটি আদিম যন্ত্র নয়, এটি আমাদের স্বাস্থ্যকর অতীত এবং आत्मनिर्भर ভবিষ্যতের প্রতীক। এই ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা মানে শুধু পুষ্টিকর চালকেই নয়, আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতিকেও ফিরিয়ে আনা।
কেন ঢেঁকিছাঁটা চালই সেরা?
আধুনিক সভ্যতা আজ পর্যন্ত ঢেঁকির চেয়ে স্বাস্থ্যকর কোনো রাইস হাস্কিং মেশিন তৈরি করতে পারেনি। অটোমিলের মেশিনে হয়তো অনেক দ্রুত এবং বিপুল পরিমাণে চাল উৎপাদন করা যায়, কিন্তু পুষ্টিগুণ আর অকৃত্রিমতা রক্ষায় ঢেঁকিই শ্রেষ্ঠ।
এর কারণ হলো, ঢেঁকিতে ধান ভানার সময় চালের উপরের লালচে আবরণ বা ভুসি (Bran) এবং অঙ্কুর (Germ) প্রায় পুরোটাই অক্ষত থাকে। চালের ৭৫ থেকে ৯০ শতাংশ পুষ্টি, বিশেষ করে ভিটামিন-বি, আয়রন এবং জিঙ্ক এই অংশেই জমা থাকে। অন্যদিকে, আধুনিক অটো মিলে চালকে অতিরিক্ত পলিশ করে সাদা ও চকচকে করার প্রক্রিয়ায় এই бесцен্য পুষ্টিস্তরটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। একারণেই ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাতের স্বাদ, গন্ধ এবং পুষ্টিগুণ—সবই আধুনিক চালের চেয়ে বহুগুণে উৎকৃষ্ট।
শুধু চাল নয়, এক সংস্কৃতির নাম ‘ঢেঁকি’
ঐতিহাসিকভাবে, ঢেঁকি ছিল বাংলার স্বনির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতি এবং সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য প্রতীক। ব্রিটিশ বিরোধী স্বদেশী আন্দোলনের সময় দেশীয় পণ্যকে प्रोत्साहन দিতে ঢেঁকিতে তৈরি চাল, আটা এবং মশলার গুরুত্ব বহুগুণে বেড়ে গিয়েছিল।
ঢেঁকি ছিল মূলত নারীদের কর্মক্ষেত্রের কেন্দ্রবিন্দু। ধান ভানা থেকে শুরু করে চাল তৈরি—সব কাজই নারীরা করতেন। একসময় প্রবাদই ছিল, 'ঢেঁকি না চালাতে পারলে বাঙালি নারী হওয়া যায় না', যা গ্রামীণ জীবনে নারীর অবদান ও গুরুত্বকে তুলে ধরে।
যেভাবে হারিয়ে গেল ঢেঁকিশালা
ষাট-সত্তরের দশকেও বাংলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ঢেঁকিশালার অস্তিত্ব ছিল। মানুষ তখন বাজারের কেনা চালের চেয়ে নিজেদের বাড়ির ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাত খেতেই বেশি পছন্দ করত। কিন্তু বিদ্যুৎচালিত ধান ভাঙানোর কল বা হাস্কিং মিল আসার পর থেকে ধীরে ধীরে ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি তার অস্তিত্ব হারাতে শুরু করে।
ঐতিহ্যের পুনরুজ্জীবন: ঢেঁকি কি ফিরবে আবার?
আধুনিকতার চাপে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেলেও, আশার কথা হলো, মানুষ আবার নিজেদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন হচ্ছে। বর্তমানে ঢেঁকিতে তৈরি বিভিন্ন খাঁটি খাদ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ছে। এই চাহিদার কারণে বাংলাদেশের বহু জায়গায় ঢেঁকির ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চলছে।
ঢেঁকি শুধু একটি আদিম যন্ত্র নয়, এটি আমাদের স্বাস্থ্যকর অতীত এবং आत्मनिर्भर ভবিষ্যতের প্রতীক। এই ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা মানে শুধু পুষ্টিকর চালকেই নয়, আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতিকেও ফিরিয়ে আনা।