আমাদের অতি পরিচিত নীল অপরাজিতা ফুল দিয়ে যে এমন সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর এক চা তৈরি করা যায়, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। এই নীল চা বা ব্লু টি এখন সারাবিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চলুন, এই জাদুকরী পানীয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক, যা শুধু রঙেই সুন্দর নয়, গুণেও ভরপুর।
ঘরেই বানিয়ে ফেলুন জাদুকরী নীল চা
দামি প্যাকেট না কিনে আপনি খুব সহজেই বাড়িতে এই চা বানাতে পারেন। প্রথমে কয়েকটি শুকনো অপরাজিতা ফুলের পাপড়ি নিন। পরিমাণ মতো পানি গরম করে তাতে ফুলগুলো দিয়ে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিন। সুন্দর নীল রঙ চলে এলে নামিয়ে ছেঁকে নিন। এর সাথে সুগন্ধের জন্য আদা, পুদিনা বা লেমনগ্রাস যোগ করতে পারেন। সবশেষে এক চামচ মধু মিশিয়ে পরিবেশন করুন আপনার নিজের হাতে বানানো ব্লু টি।
এক ফোঁটা লেবুতে নীল থেকে পার্পেল!
এই চায়ের সবচেয়ে চমৎকার অংশ হলো এর রঙ বদলানোর ম্যাজিক। এক কাপ নীল চায়ে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মেশানো মাত্রই এর পিএইচ লেভেলে পরিবর্তন আসে এবং সাথে সাথে চায়ের রঙ নীল থেকে বদলে উজ্জ্বল পার্পেল বা বেগুনি হয়ে যায়! তখন একে বলা হয় পার্পেল টি। এই পরিবর্তনটি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি এর স্বাদও অপূর্ব।
শুধু রঙেই সুন্দর নয়, স্বাস্থ্যগুণেও ভরপুর
বহুকাল আগে থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে নীল চা ঔষধি পানীয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে:
- দুশ্চিন্তা ও ঘুমের সমস্যা কমায়: নীল চা স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে। তাই সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে বা রাতে ভালো ঘুমের জন্য শোয়ার আগে এক কাপ নীল চা পান করা অত্যন্ত উপকারী। এটি মাথাব্যথা কমাতেও সাহায্য করে।
- হজমে সাহায্য করে: ভারী খাবার খাওয়ার পরে এক কাপ নীল চা পান করলে তা হজমে সহায়তা করে এবং লিভারকে সুস্থ রাখে।
- ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে: প্রতিদিন খাবার পর এক কাপ করে এই চা পান করলে তা রক্তের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
কখন পান করবেন আর কারা থাকবেন সতর্ক?
নীল চা পান করার সবচেয়ে ভালো সময় হলো রাতের খাবারের পর বা ঘুমানোর আগে। এর তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই এবং পুষ্টিবিদরা একে একটি 'সুপার হেলদি' পানীয় হিসেবেই গণ্য করেন। তবে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে গর্ভবতী মহিলাদের এই চা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়।