রকফেলার চিকিৎসা ব্যবস্থা: স্বাস্থ্য নয়, ব্যবসার সাম্রাজ্য

রকফেলার চিকিৎসা ব্যবস্থা: স্বাস্থ্য নয়, ব্যবসার সাম্রাজ্য
আমাদের অধিকাংশ মানুষই জানে না আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার আসল ইতিহাস।
 চমকে উঠবেন জেনে যে—যিনি এই পুরো সিস্টেম দাঁড় করালেন, তিনি কোনো ডাক্তার ছিলেন না। চিকিৎসা সম্পর্কে তার কোনো জ্ঞানই ছিল না।
তার নাম জন ডি. রকফেলার।
 তিনি ছিলেন একজন তেল ব্যবসায়ী। এক ধূর্ত ব্যবসায়ী।
তেল শোধন করার পর তার হাতে থেকে যেত প্রচুর বর্জ্য পদার্থ—যা দিয়ে আর কোনো কাজ হতো না। অন্যেরা যেগুলো ফেলে দিত, তিনি সেটা কাজে লাগানোর উপায় খুঁজে বের করলেন।
👉 “কেন ফেলে দেব? বিক্রি করা যায় না?”
সেখান থেকেই শুরু হলো খেলা। সেই বর্জ্য পদার্থকে তিনি রূপ দিলেন কৃত্রিম ওষুধে (Synthetic drugs)। তারপর তার টাকায় দখল করলেন মেডিকেল কলেজ আর গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
তিনি পাঠ্যক্রম পাল্টে দিলেন, প্রফেসর-ডাক্তারদের কিনে নিলেন, যাতে পুরো মেডিকেল শিক্ষা কেবল তার ওষুধ-নির্ভর পদ্ধতির ওপর দাঁড়িয়ে যায়।
ফলাফল:
প্রকৃত চিকিৎসা যেমন ভেষজ, হোমিওপ্যাথি, ন্যাচারোপ্যাথি—সবকিছুকে ধীরে ধীরে “ভুয়া চিকিৎসা” বলে প্রচার করা হলো। হাসপাতাল থেকে মুছে ফেলা হলো। বই থেকে বাদ দেওয়া হলো। মানুষকে ভয় দেখানো হলো, “এগুলো বিপজ্জনক, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে।”
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় জানেন?
 রকফেলার নিজের পরিবারের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করতেন হোমিওপ্যাথি আর ন্যাচারোপ্যাথি ডাক্তারদের।
 কারণ তিনি জানতেন—এসব কাজ করে।
 কিন্তু জনগণকে তিনি সেটা থেকে বঞ্চিত করলেন।
কেন?
 কারণ “একজন সুস্থ রোগী মানেই ব্যবসায় ক্ষতি।”
চিকিৎসা নয়, রোগকে দীর্ঘস্থায়ী করাই ছিল তার উদ্দেশ্য।
💊 আধুনিক চিকিৎসার আসল খেলা
আজকের চিকিৎসা ব্যবস্থা সমস্যার মূলে যায় না।
 বরং উপসর্গ ঢেকে রাখে।
  • মাথাব্যথা? – খাও ট্যাবলেট।
  • ঘুমের সমস্যা? – খাও সেডেটিভ।
  • মন খারাপ? – খাও অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট।
  • প্রথম ওষুধে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া? – খাও নতুন ওষুধ।
এভাবেই একটি ওষুধ থেকে আরেকটি, আরেকটি থেকে আরও অনেক… রোগ সারানো নয়, রোগীকে সারাজীবনের জন্য ওষুধ-নির্ভর গ্রাহকে পরিণত করা হলো মূল ব্যবসা।
মা-বাবাদেরও শেখানো হলো—
 👉 জ্বর উঠলে ভয় পেতে হবে, তাড়াতাড়ি ওষুধ দিতে হবে।
 👉 কাশি হলে চেপে ধরতে হবে।
 👉 ব্যথা হলে কারণ খুঁজতে হবে না, ব্যথা থামাতে হবে।
কিন্তু আমরা ভুলে যাই—
 উপসর্গ আসলে শরীরের ভাষা।
শরীর বারবার সংকেত দেয়—“ভেতরে কিছু গড়বড় হচ্ছে।”
কিন্তু আধুনিক চিকিৎসা বলে—“এই সংকেত বন্ধ করো, ট্যাবলেট খাও।”
গাড়ির ড্যাশবোর্ডে লাল বাতি জ্বললে আমরা কখনও সেটাকে ভেঙে ফেলি না, বরং সার্ভিসিংয়ে দিই।
 কিন্তু শরীর যখন সংকেত দেয়, তখন আমরা সেটা জোর করে বন্ধ করে দিই। আর তাই ক্রনিক রোগ আজ মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে।
🩺 তাহলে কি চিকিৎসা ব্যবস্থা ভাঙা?
না!
 এটা ভাঙা নয়—এভাবেই তৈরি করা হয়েছে।
রকফেলার পুরো সিস্টেম বানিয়েছিলেন যেন মানুষ সুস্থ না হয়ে সারা জীবন ওষুধের গ্রাহক হয়ে থাকে।
এখানে স্বাস্থ্য নয়, আসক্তিই মূল লক্ষ্য
🌿 প্রকৃত নিরাময় কোথায়?
প্রকৃত নিরাময় শুরু হয় তখনই, যখন তুমি শরীরের সংকেত শোনো।
 যখন তুমি প্রশ্ন করো—“কেন আমি অসুস্থ হচ্ছি?”
  • শরীরের প্রাকৃতিক ডিটক্স প্রক্রিয়াকে সাহায্য করো।
  • শরীরের ভিটামিন ও মিনারেল ঘাটতি পূরণ করো।
  • সমস্যার মূলে যাও, কেবল উপসর্গ চেপে দিও না।
শরীর ভাঙা নয়।
 বরং শরীর এক অসাধারণ নকশা—যা নিজেই সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।
 শুধু দরকার সঠিক জিনিস দেওয়া আর শরীরের ভাষা শোনা।
🔑 আসল সত্য
👉 এই সিস্টেম কখনোই তোমাকে সারানোর জন্য বানানো হয়নি।
 👉 কিন্তু তোমার শরীর সারানোর জন্যই তৈরি।
আধুনিক চিকিৎসা তোমাকে নির্ভরশীল করে।
 প্রকৃত চিকিৎসা তোমাকে মুক্ত করে।
এখন প্রশ্ন হলো—
 তুমি কি রোগ লুকিয়ে রাখতে থাকবে?
 না কি সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করবে?
✨ উপসংহার
জন ডি. রকফেলার যে চিকিৎসা সাম্রাজ্য বানিয়েছিলেন, তা আজও চলছে।
 মানুষকে সুস্থ করার জন্য নয়, বরং ব্যবসার জন্য।
তবে সত্য হলো—
 তোমার শরীরই তোমার আসল চিকিৎসক।
শুধু তাকে সঠিক সুযোগ দাও, আর নিজের যত্ন নাও।

Comments

0 total

Be the first to comment.

প্রাকৃতিক উপায়ের মাধ্যমে ত্বক ও স্বস্থ্য রক্ষার ঐতিহ্য ও বিজ্ঞান প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

প্রাকৃতিক উপায়ের মাধ্যমে ত্বক ও স্বস্থ্য রক্ষার ঐতিহ্য ও বিজ্ঞান প্রসঙ্গে

ত্বকে অসংখ্য ভালো ও খারাপ ব্যাকটেরিয়া পরস্পর ঝামেলা না করে বসবাস করে। এরা ব্যালেন্স রেখে চলে, বর্জ্য...

Aug 17, 2025

More from this User

View all posts by admin